তীব্র সমালোচনার মুখে ৬০ ডলারের নতুন টিকিট বানালো ফিফা

By স্পোর্টস ডেস্ক
17 December 2025, 10:48 AM

২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিটের অতিরিক্ত উচ্চমূল্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত মূল্য কাঠামোয় সামান্য পরিবর্তন আনল ফিফা। সংস্থাটি ঘোষণা করেছে, প্রতিটি ম্যাচে অংশগ্রহণকারী দুই দলের সমর্থকদের জন্য সীমিত সংখ্যক ৬০ ডলারের 'সাপোর্টার এন্ট্রি টিয়ার' টিকিট রাখা হবে।

ফিফার হিসাব অনুযায়ী, এই টিকিট মোট আসনের মাত্র ১.৬ শতাংশ, অর্থাৎ গড়ে প্রতি ম্যাচে প্রায় ১,০০০টি। প্রতিটি দল তাদের বরাদ্দ টিকিটের একটি অংশ এই নতুন ক্যাটাগরিতে পাবে। তবে এর বাইরে থাকা সব ক্যাটাগরির টিকিটের দাম অপরিবর্তিত থাকছে, যেখানে অধিকাংশ টিকিটের মূল্য কয়েক শ ডলার পর্যন্ত।

ফিফার এই সিদ্ধান্ত আসে তখনই, যখন ইউরোপের সমর্থক সংগঠন ফুটবল সাপোর্টার্স ইউরোপ বিশ্বকাপের টিকিটমূল্যকে 'চাঁদাবাজিমূলক' বলে আখ্যা দিয়েছে। অক্টোবর মাসে প্রথমবার দাম প্রকাশের পর সেটি আরও বাড়ানো হয়, যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকিটমূল্য হিসেবে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

এর আগে সমর্থকদের জন্য সংরক্ষিত টিকিটগুলোর দামও সাধারণ দর্শকদের টিকিটের সমান রাখায় ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। অনেক ম্যাচে সাপোর্টার টিকিটের দাম ৫০০ থেকে ৭০০ ডলার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা বিশ্বকাপ ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে সমালোচিত হয়।

ফুটবল সাপোর্টার্স ইউরোপ এক বিবৃতিতে বলেছে, 'এতে প্রমাণ হয় ফিফার টিকিট নীতি স্থির নয়, তড়িঘড়ি করে নেওয়া সিদ্ধান্ত এবং যথাযথ পরামর্শ ছাড়াই, এমনকি ফিফার নিজস্ব সদস্য ফেডারেশনগুলোর সঙ্গেও আলোচনা হয়নি। আমরা স্বীকার করি, ফিফা হয়তো ক্ষতির বিষয়টি বুঝতে শুরু করেছে, কিন্তু এই সংশোধন যথেষ্ট নয়। বাস্তবে প্রতি ম্যাচে ও প্রতি দলের ক্ষেত্রে কয়েক শ' সমর্থকের বেশি ৬০ ডলারের সুবিধা পাবেন না; অধিকাংশকেই আগের মতোই অতিরিক্ত উচ্চমূল্য দিতে হবে।'

এমনকি একাধিক জাতীয় ফুটবল ফেডারেশনও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। জার্মানি, তিউনিসিয়া, ইংল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের ফেডারেশন জানিয়েছে, টিকিটমূল্য নির্ধারণের আগে তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি এবং এই দাম অনেক সমর্থকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ফিফা অবশ্য বলছে, ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চে নিজেদের দলকে অনুসরণ করা সমর্থকদের জন্য বিশ্বকাপ আরও সাশ্রয়ী করতেই এই নতুন টিকিট ক্যাটাগরি চালু করা হয়েছে। তবে সীমিত সংখ্যার কারণে এই সিদ্ধান্ত কতটা স্বস্তি আনতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।