বড় জয়ে প্রথমবার এমএলএস কাপের ফাইনালে মেসির মায়ামি
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমএলএস কাপের ফাইনালে উঠল ইন্টার মায়ামি। রোববার সকালে প্লে-অফের ইস্টার্ন কনফারেন্সের ফাইনালে তারা গুঁড়িয়ে দিল নিউইয়র্ক সিটি এফসিকে। ঘরের মাঠ ফ্লোরিডার চেজ স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির ক্লাব জিতল ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে।
প্রথমার্ধে ২-১ গোলে এগিয়ে থাকা মায়ামি বিরতির পর আরও তিনবার জাল খুঁজে নেয়। হ্যাটট্রিকের স্বাদ নেন ২৬ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড তাদেও আয়েন্দে। সেমিফাইনালে এফসি সিনসিনাটিকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করার পথে জোড়া গোল করেছিলেন তিনি। একবার করে লক্ষ্যভেদ করেন আরেক আর্জেন্টাইন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মাতেও সিলভেত্তি ও ভেনেজুয়েলান মিডফিল্ডার তেলাস্কো সিগোভিয়া।
সেমিতে তিনটি অ্যাসিস্ট করার পাশাপাশি গোলের দেখা পেয়েছিলেন মেসি। আর্জেন্টাইন মহাতারকা ফাইনালেও ছাপ রাখেন নিজের সামর্থ্যের। দুর্দান্ত জয়ের পর তাকে নিয়ে মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো বলেছেন, 'আজ হয়তো আমরা অবাক হচ্ছি যে, সে গোল করেনি। তবে তৃতীয় গোলটিতে অবদান রাখার মাধ্যমে সে আমাদেরকে মানসিক শান্তি এনে দিয়েছে। এমন একটি অ্যাসিস্ট করেছে, যা কেবল সে-ই দেখতে পায়। কার্যত সে-ই খেলাটির ফল নির্ধারণ করে দিয়েছে।'
Eastern Conference champions: @InterMiamiCF! pic.twitter.com/6wfTHODZG1
— Major League Soccer (@MLS) November 30, 2025
এর আগে তিনবার প্লে-অফে খেলেছিল মায়ামি— ২০২০, ২০২২ ও ২০২৪ সালে। তবে একবারও তারা ইস্টার্ন কনফারেন্সের প্রথম রাউন্ডের বাধা অতিক্রম করতে পারেনি। এবার সেমি ও ফাইনাল জিতে এমএলএস কাপের ফাইনালেরই টিকিট নিশ্চিত করেছে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটি।
ম্যাচের ১৪তম মিনিটে মায়ামি এগিয়ে যায় আয়েন্দের গোলে। সার্জিও বুসকেতসের উঁচু করে বাড়ানো বলের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর ফিরে পেয়ে জোরাল শটে জাল কাঁপান তিনি। ২৩তম মিনিটে দ্বিগুণ হয় ব্যবধান। বামপ্রান্ত থেকে জর্দি আলবার নিখুঁত ক্রসে হেড করে আবার উল্লাসে মাতেন আয়েন্দে। বিরতির আগে লড়াইয়ে প্রাণ ফেরায় নিউইয়র্ক। ৩৭তম মিনিটে ম্যাক্সি মোরালেজের ফ্রি-কিকে মাথা ছুঁইয়ে জাস্টিন হাক ব্যবধান কমান।
বিরতির পর সমতা টানার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকে নিউইয়র্ক। তবে তাদের সামনে বাধার নিরেট দেয়াল হয়ে দাঁড়ান মায়ামির গোলরক্ষক রিওস নোভো। গোটা ম্যাচে তিনটি সেভ করেন তিনি। আক্রমণের ঝাপটা সামলে ৬৭তম মিনিটে পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয় মায়ামি। ডি-বক্সে মেসির পাস থেকে গোল করেন ফাঁকায় থাকা সিলভেত্তি।
৮৩তম মিনিটে মায়ামির জয় একরকম চূড়ান্ত হয়ে যায়। আলবার ব্যাক-হিলে বল পেয়ে নিশানা খুঁজে নেন বদলি নামা সিগোভিয়া। ৮৯তম মিনিটে দলের বড় জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন আয়েন্দে। ইয়ানিক ব্রাইটের রক্ষণচেরা পাস ধরে ছুটে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপর বুদ্ধিদীপ্ত চিপ শটে পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমএলএসে খেলে ৩০টি ক্লাব— ইস্টার্ন ও ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সে সমান ১৫টি করে। দুটি অংশের লিগ পর্বের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ নয়টি করে দল সুযোগ পায় প্লে-অফে। ইস্টার্ন ও ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের ফাইনালের জয়ীরা মুখোমুখি হয় এমএলএস কাপের ফাইনালে, যা আগামী ৭ ডিসেম্বর ফ্লোরিডার চেজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে মায়ামি মুখোমুখি হবে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের। ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের ফাইনালে ভ্যাঙ্কুভার ৩-১ গোলে হারিয়েছে সান ডিয়েগোকে।