শিশু হাসপাতালে বাড়ছে নিউমোনিয়া রোগী

আহমেদ দীপ্ত
আহমেদ দীপ্ত
17 January 2024, 04:42 AM
UPDATED 17 January 2024, 11:42 AM

নিউমোনিয়া, অ্যাজমা ও ডায়রিয়ার মতো শীতজনিত রোগের চিকিৎসার জন্য শিশু ও বয়স্করা বেশিরভাগই হাসপাতালে আসছেন।

এরইমধ্যে ঢাকা শিশু হাসপাতালের নিউমোনিয়া ওয়ার্ডের ১৯টি বেডের সবগুলোতেই রোগী ভর্তি।

হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, 'একটি বেড খালি হওয়ার আগেই আরেকটি শিশু আসছে।'

এ বছর এ পর্যন্ত নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৩৬টি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং নিউমোনিয়ার উপসর্গ নিয়ে ৩৬টি শিশু মারা গেছে।

গত বছরের জানুয়ারিতে মোট ৪২৯ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল যা তার আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৮৬ জন।

দেড় বছরের শিশু মরিয়ম গত ২৪ দিন ধরে নিউমোনিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

'আমার মেয়ের কাশি আছে- তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে এবং ফুসফুসের সমস্যা আছে।'

মরিয়মের মা শিরিন আক্তার বলেন, 'ডাক্তার বলেছেন, মরিয়মের সুস্থ হতে আরও সময় লাগবে।'

মরিয়মের মতো নয় মাস বয়সী আয়ানেরও নিউমোনিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে।

আয়ানের মা শারমিন আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার ছেলের জ্বর চক্রাকারে আসে। প্রতি চার ঘণ্টা পরপর তাপমাত্রা ওঠানামা করে।

চিকিৎসার পর ছেলে জ্বর থেকে সেরে উঠলেও এখনো তার কাশি যায়নি।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২০০ রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসছে এবং তাদের বেশিরভাগই শ্বাসকষ্টসহ নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় ভুগছে।

শীতের প্রাদুর্ভাবের কারণে শিশুরা সবচেয়ে বেশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় এ সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান তিনি।

যাদের শারীরিক অবস্থা খুবই জটিল হয়ে ওঠে কেবল তাদেরকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ সংখ্যা কমতে পারে।

বিশ্বজুড়ে নিউমোনিয়া শীর্ষ পাঁচটি সংক্রামক রোগের মধ্যে একটি যা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর কারণ। আইসিডিডিআর,বি'র তথ্য অনুযায়ী, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭ লাখ মানুষের মৃত্যুর ১৪ শতাংশই এর জন্য দায়ী।

আইসিডিডিআর,বি'র তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি ঘণ্টায় ২ থেকে ৩টি শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়। প্রতি বছর মারা যায় অন্তত ২৪ হাজার শিশু।

ঠান্ডাজনিত রোগ প্রতিরোধে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ, মাস্ক ও আরামদায়ক গরম পোশাক পরা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ও শিশুরোগ বিভাগের প্রধান ইফফাত আরা সামসাদ বলেন, শীতকালে শিশুরা যাতে নিউমোনিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।