চালের দাম আবারও বেড়েছে

নীলিমা জাহান
নীলিমা জাহান
শাহীন মোল্লা
শাহীন মোল্লা
16 January 2024, 05:21 AM
UPDATED 16 January 2024, 13:05 PM

 আমন ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে বিআর-২৮, পাইজাম, গুটি ও সুগন্ধি ধানের দাম কমার কথা ছিল। কিন্তু ঢাকার কাঁচাবাজারে গত ১০ দিনে চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে।

সদ্য কাটা নতুন জাতের ধানের পাশাপাশি মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের দামও গত তিন দিনে বেড়েছে।

পাইকারি বিক্রেতাদের দাবি, তাদের কেনা দাম বেশি, অন্যদিকে মিলারদের দাবি, উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ধানের দাম বেড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারওয়ানবাজারে চালের এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, নতুন সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বললেও ঘটছে উল্টোটা।

মতলব রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী আবু রায়হান জগলু বলেন, আমরা ভেবেছিলাম নতুন ধান উঠলে দাম কমবে, কিন্তু আমরা এত দাম বেড়ে যাবে সেটা ভাবিনি।'

তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর চালের দাম কেন বেড়ে গেছে তা এখনো খুঁজে পাননি চালের পাইকাররা।

মিরপুর ১১ নম্বর কাঁচাবাজারের মকবুল রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী কামাল সরদার সাধারণত কুষ্টিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, শেরপুর ও দিনাজপুর এই পাঁচ জেলা থেকে চাল সংগ্রহ করেন।

'তবে এবার সব জেলাতেই দাম বেড়েছে। আমরা সিন্ডিকেটের শিকার হয়েছি কিনা জানি না। অন্যদিকে, আমাদের নিয়মিত গ্রাহকরা হঠাৎ দাম বৃদ্ধির জন্য আমাদের দোষারোপ করছেন। তাদের কাছ থেকে কোনো লাভ রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে,' বলেন তিনি।

যেসব মিলার বেশি দাম নিচ্ছে তাদের কঠোর মনিটরিং ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কামাল।

গত সপ্তাহে ঢাকার শান্তিনগরের নাহিদ রাইস এজেন্সির আব্দুল মাবুদ পুরান ঢাকার বাবু বাজার থেকে এক কেজি সুগন্ধি চাল ১১২ টাকায় কিনেছেন, গতকাল সেই একই চাল বিক্রি হয়েছে ১২২ টাকায়।

তিনি বলেন, এক সপ্তাহে বিআর-২৯ চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৫৮ এবং মিনিকেট চালের দাম ১০ টাকা বেড়ে ৬৮ টাকা হয়েছে।

এটি নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর আরও চাপ তৈরি করেছে, যারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সাথে লড়াই করছেন।

বিআর-২৯ চাল কিনতে ১০ দিন আগের চেয়ে ১০০ টাকা বেশি খরচ করতে হয়েছে নূরজাহান বেগমকে। তিনি বলেন, 'এটা গরিবের ওপর বাড়তি বোঝা ছাড়া আর কিছুই নয়।'

প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে কীভাবে ব্যবসা চলবে তা নিয়ে এখন ভাবতে হচ্ছে কারওয়ানবাজারে মেস পরিচালনাকারী মো. টিপুকে।

মুদি মালামালের জন্য বেশি টাকা দিতে হলেও আমি হঠাৎ করে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিতে পারছি না, বলছিলেন টিপু। যিনি জনপ্রতি ১২০ টাকায় ৬০ জনকে দিনে দুই বার খাওয়ান।

উত্তরাঞ্চলে চালের পাইকারি বিক্রির অন্যতম বড় কেন্দ্র নওগাঁর চাল ও ধান মজুদদার ও পাইকারী সমিতির সভাপতি নিরদবরণ সাহা জানান, গত দুই সপ্তাহে চালের দাম কেজিতে দুই থেকে ছয় টাকা বেড়েছে।

তিনি বলছিলেন, দাম আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কারণ ব্যবসায়ীরা এখন চাল মজুদ করছে।

এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বা খাদ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলার জন্য ডেইলি স্টার বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।