বৃহত্তর স্বার্থে বহুপাক্ষিকতার চেতনা সমুন্নত রাখার আহ্বান মোমেনের

By ইউএনবি, ঢাকা
12 June 2023, 18:25 PM
UPDATED 13 June 2023, 00:31 AM

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার জি-২০ দেশের মন্ত্রীদের সম্মেলনের (ডিএমএম) বিভিন্ন অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের বৃহত্তর স্বার্থে বহুপাক্ষিকতার প্রকৃত চেতনাকে সমুন্নত রাখার ওপর জোর দিয়েছেন।

সোমবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একটি বার্তা অনুসারে, মোমেন গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর সামনে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জের ওপর জোর দেন এবং বাস্তবায়ন, অর্থায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়ে উন্নত দেশগুলোর সমর্থনের আহ্বান জানান।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

জি২০ দেশগুলোর পাশাপাশি অতিথি দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে প্রাথমিকভাবে বহুপাক্ষিকতা, এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং সবুজ উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে এসডিজি বাস্তবায়ন, গ্রিন ডেভেলপমেন্ট এবং 'লাইফস্টাইল ফর এনভায়রনমেন্ট' মিশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও অর্জন তুলে ধরেন।

তিনি ভারতের উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে জি২০ উন্নয়ন মন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে তার ভারতীয় প্রতিপক্ষ জয়শঙ্করের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২ দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের বিষয় এবং আগামী দিনে ঘটতে পারে এমন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন।

মোমেন জি২০ মিটিং সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং ভারতের জি২০ সভাপতিত্বে বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের নেতৃত্বের ভূমিকার জন্য ভারতের প্রশংসা করেন।

উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত বিভিন্ন অর্জনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

মোমেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রী মোহাম্মদ মালিকি বিন ওসমান এবং ইউএসএআইডির উপ-প্রশাসক ইসোবেল কোলম্যানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

সিঙ্গাপুরের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মোমেন সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি লোক নিয়োগের আহ্বান জানান।

ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সঙ্গে তার বৈঠকে মোমেন বাংলাদেশ এবং ইউএসএআইডির মধ্যে ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে শক্তিশালী অংশীদারত্বের কথা তুলে ধরেন।

উভয় বৈঠকেই তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত সব রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশে দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য সমর্থন চেয়েছেন।

বারাণসীতে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মন্ত্রীদের এ সম্মেলনে অর্থনৈতিক মন্দা, ঋণ মন্দা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, দূষণ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য ও অসমতা, খাদ্য ও জ্বালানির নিরাপত্তাহীনতা, বিশ্বব্যাপী সরবরাহ-শৃঙ্খল ব্যাঘাত, ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা, জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট প্রভৃতির কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, জি২০ উন্নয়ন মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকটিকে এসডিজির অর্জনকে ত্বরান্বিত করার জন্য পদক্ষেপের বিষয়ে সম্মিলিতভাবে একমত হওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখা হয় এবং উন্নয়ন, পরিবেশ ও জলবায়ুর মতো বিষয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করার পাশাপাশি ব্যয়বহুল বাণিজ্য শর্ত এড়িয়ে চলার সুযোগ হিসেবে দেখা হয়; যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর অগ্রগতিকে বাধা দেয়।

ভয়েস অব দ্য গ্লোবাল সাউথ সামিট অনুসারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়, যা ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ভারত আয়োজিত হয়েছিল এবং বারাণসী বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো নিউইয়র্কে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের এসডিজি শীর্ষ সম্মেলনেও অবদান রাখবে।

বৈঠকে দুটি প্রধান অধিবেশন থাকবে, একটি 'মাল্টিলেট্যারালিজম: কালেক্টিভ অ্যাকশনস ফর অ্যাসসিলেরেটিং প্রোগেস টুয়ার্ডস এসডিজিস' এবং আরেকটি 'গ্রিন ডেভেলপমেন্ট: এ লাইফ (লাইফস্টাইল ফর এনভায়রনমেন্ট) অ্যাপ্রোচ' বিষয়ক।

৬-৯ জুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ এবং চূড়ান্ত ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ (ডিডব্লিউজি) সভার আগে উন্নয়ন মন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছিল।

প্রতিনিধিদের বিশ্বের প্রাচীনতম শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম বারাণসীর সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের আভাস দেওয়ার জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী এবং ভ্রমণেরও আয়োজন করা হয়েছে।