ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ডেইলি স্টার সেন্টারে 'ইতিহাস আড্ডা'
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) ভোর থেকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে ভাসানীর সমাধিতে মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ভক্ত-অনুরাগীদের কণ্ঠে 'যুগ যুগ জিও তুমি মওলানা ভাসানী' স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে জননেতার সমাধিস্থল।
এ উপলক্ষে আজ বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে 'কৃষকের মুক্তি ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব: ভাসানীর সাধনা' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজনে করছে ডেইলি স্টার ইতিহাস আড্ডা। বাংলার অধিকারবঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের অধিকার রক্ষায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন যিনি, সেই কীর্তিমানকে নিয়ে কথা বলবেন কবি ও গবেষক ফরহাদ মজহার, প্রাবন্ধিক ফিরোজ আহমেদ ও শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা।
ভাসানী সবসময় ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন নির্মোহ, অনাড়ম্বর ও অত্যন্ত সাদাসিধে। তার সাধারণ জীবনযাপন এ দেশ ও জনগণের প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রতিফলন। শোষণ ও বঞ্চনাহীন,গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তিনি।
মওলানা ভাসানীর জন্ম ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও তার জীবনের বড় অংশই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইল পৌর এলাকার সন্তোষে। শৈশব থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন।
১৯১৭ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন। ১৯২৩ সালে 'স্বরাজ্য পার্টি' গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং ১৯২৬ সালে আসামে কৃষক-প্রজা আন্দোলন শুরু করেন। ১৯২৯ সালে ধুবড়ীর ভাসান চরে কৃষক সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে 'ভাসানী' উপাধি যুক্ত হয় তার নামের সঙ্গে। তিনি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে গঠিত প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন। ১৯৫৭ সালের ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার 'খামোশ' উচ্চারণ রাজনৈতিক ইতিহাসে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।