কালকের ম্যাচে অনেক হলুদ কার্ড হবে, গালাগালি হবে: জামাল

By ক্রীড়া প্রতিবেদক
17 November 2025, 08:44 AM
UPDATED 17 November 2025, 15:39 PM

এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের। প্রতিপক্ষ ভারতও ছিটকে গেছে বাছাইপর্ব থেকে। তবে দুই দলের মধ্যকার আসন্ন লড়াই নিয়ে উত্তেজনা ও আগ্রহের বিন্দুমাত্র কমতি নেই। লাল-সবুজ জার্সিধারীদের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার কণ্ঠেও শোনা গেল সেই সুর।

আগামীকাল মঙ্গলবার বাছাইয়ের বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়। এর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে হাজির হন জামাল। গত মার্চে শিলংয়ে বাছাইয়ের আগের দেখায় গোলশূন্য ড্র করেছিল দুই দল।

ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে নিজের অনুভূতি জানান বাংলাদেশের দলনেতা, 'এটা অনেক আবেগময় ম্যাচ, হাইভোল্টেজ ম্যাচ। এই ম্যাচের পর জাতীয় দলের জন্য অনেক লম্বা বিরতি আছে। বছরটা যদি জয় দিয়ে শেষ করতে পারি, তা শুধু আমাদের জন্যই নয়, সমর্থক ও আপনাদের সবার জন্যও ইতিবাচক হবে। তাই আমার জন্য ম্যাচটি আবেগের। একই সঙ্গে আমাকে মস্তিষ্ক ব্যবহার করে খেলতে হবে।'

রাজনৈতিকসহ নানা কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে কোনো খেলাতেই বাংলাদেশ ও ভারত মুখোমুখি হলে থাকে বাড়তি আলোড়ন। জামাল মনে করেন, সামনের ম্যাচেও খেলোয়াড়দের মধ্যে আক্রমণাত্মক মনোভাব থাকবে, 'কালকের ম্যাচে অনেক ফ্রি-কিক হবে, হলুদ কার্ড হবে, গালাগালি হবে। আমি যদিও এটাকে স্বাভাবিক ম্যাচ হিসেবেই ধরব। তবে এই ম্যাচের তাৎপর্য আমি জানি।'

বাংলাদেশ শেষবার ভারতকে হারিয়েছিল দীর্ঘ ২২ বছর আগে। ঢাকায় ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছিল তারা। এবার খরা কাটানোর দারুণ সুযোগ দেখেন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার, 'আমরা যে অবস্থায় আছি, এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী স্কোয়াড। তাই অবশ্যই আমাদের একটা বড় সুযোগ আছে ভারতকে হারানোর।'

বর্তমানে বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে বড় তারকা হামজা চৌধুরীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের রসায়ন তুলে ধরেন তিনি, 'হামজা বিদেশ থেকে এসেছে আমার মতো। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া খুব ভালো। হামজার যখনই কোনো সমস্যা হয়, আমাকে টেক্সট করে বা কল করে। ফুটবল নিয়ে কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে আমি হামজাকে জানাই।'

জাতীয় দলের জার্সিতে ছয় ম্যাচ খেলে হামজার গোল চারটি। এর দুটিতেই অবদান রেখে ভীষণ খুশি ৩৫ বছর বয়সী তারকা বলেন, 'আমি সৌভাগ্যবান যে হামজাকে অ্যাসিস্ট করতে পেরেছি। একটা কর্নার থেকে হেড, আরেকটা বাইসাইকেল কিক। বাইসাইকেল কিকে গোলটা আমার দেখা বাংলাদেশের অন্যতম সেরা। হামজার গোলের র‍্যাঙ্কিং করলে এটা অবশ্যই এক নম্বরে থাকবে।'

hamza
ছবি: স্টার

বাড়তি চাপ থাকলেও সেটা নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ জামাল, 'চাপ থাকাটা স্বাভাবিক। সকালে আমি যখন আমি নাস্তা করতে যাই, লিফটের ভেতরে আমি বাংলাদেশের ক্রিকেট কোচকে পেলাম। তো উনি আমাকে একই প্রশ্ন করেন। আমি বলেছি, চাপ সব সময় থাকে। তবে এটা সামলানোই আমার কাজ। পরে তিনি জানান,তিনিও ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে থাকবেন। তাই ক্রিকেটের দিকটা যদি দেখেন, তারাও রোমাঞ্চিত।'

এই ম্যাচের যে পুরো বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে, তা জানা আছে তার, 'শুধুমাত্র সমর্থক কিংবা আমাদের পরিবার নয়, অন্যান্য খেলাধুলার লোকেরাও আগ্রহ দেখাচ্ছে। সারা বাংলাদেশ এই খেলা দেখবে।'

সাম্প্রতিক সময়ে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করার বাজে অভ্যাস পেয়ে বসেছে বাংলাদেশকে। রক্ষণভাগের ভুলে বারবার এমনটা ঘটছে, মেনে নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, 'রক্ষণে অবশ্যই আমাদের সমস্যা আছে । তবে ভারত যদি অনেক উপরে উঠে খেলে, তাহলে আমরা সামনে অনেক স্পেস পাব।'

ভারতের দুর্বলতার সুযোগ নিতে নিজেদের আক্রমণভাগের ফুটবলারদের ওপর আস্থা রয়েছে তার, 'আক্রমণে যারা খেলবে, ওরা অনেক গতিময় খেলোয়াড়। রাকিব (হোসেন) সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুতগতির খেলোয়াড়। তাকে যদি ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারি, তাহলে ভারতের রক্ষণে সন্দেশ (ঝিঙ্গান) ও রাহুল (ভেকে) যে-ই থাকুক না কেন, সে রক্ষণ গুঁড়িয়ে দিতে পারবে।'