আমি আসলে একজন বোরিং স্বভাবের মানুষ: মুশফিক
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পেশাদার ক্রীড়াবিদ হিসেবে মুশফিকুর রহিমের সুনাম বহুদিনের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই দশকের পথচলা, অসংখ্য স্মরণীয় ইনিংস, তারপরও নিজের শততম টেস্টকে তিনি বানালেন আরও বিশেষ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে ব্যাট হাতে দারুণ সেঞ্চুরি করে তিনি এই মাইলফলককে রাঙিয়ে তুলেছেন। আর সেঞ্চুরির পর সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন তার অনুশীলন-জীবন, চরিত্র ও পেশাদারিত্বের গভীর দর্শন।
মুশফিকের সবচেয়ে বড় শক্তি তার নিয়ম-শৃঙ্খলা। নিজের কথায় তিনি আরও স্পষ্ট করলেন সেই সত্য, 'সরাসরি বললে, আমি আসলে একজন বোরিং স্বভাবের মানুষ। আমি প্রতিদিন অনুশীলনে একই কাজ করতে পারি, বারবার করতে পারি। সেটা ২০ বছর হোক কিংবা ৪০ বছর ও বাঁচি, আমি সেটা করব। কারণ এটা আমার নিজের জন্য এবং দলের জন্য প্রয়োজনীয়।'
বছরের পর বছর ধরে একই রুটিন, একই মনোযোগ বজায় রাখা, এটাই তাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ও নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটারদের একজন করে তুলেছে। তিনি জানেন, প্রতিভা গুরুত্বপূর্ণ হলেও দিনের পর দিন সেই প্রতিভাকে শাণিত না করলে সাফল্য আসে না।
টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ ম্যাচ খেলার কীর্তি ক্রিকেট ইতিহাসেই বিরল। সেখানে দেশের হয়ে প্রথম। সেই ম্যাচেই সেঞ্চুরি করা মুশফিকের জন্য কেবল ব্যক্তিগত অর্জন নয়; এটি তার দীর্ঘদিনের শ্রম, অধ্যবসায় ও পেশাদারিত্বের চূড়ান্ত প্রমাণ। দল যখন কঠিন পরিস্থিতিতে ছিল, তখন ধৈর্য ধরে ইনিংস গড়ে তোলেন মুশফিক। উইকেটের ধৈর্যের পরীক্ষা, বোলারদের শারীরিক চ্যালেঞ্জ, আর মিরপুরের কঠিন পিচ, সবই সামলে একাগ্রতায় গড়ে তোলেন তার সেঞ্চুরি।
তবে এত অর্জনের পরও তিনি নিজেকে নিয়ে আড়ম্বর করতে নারাজ। বরং নিজের বাস্তববাদী নীতি নিয়েই বেশি কথা বলতে ভালোবাসেন তিনি, 'পেশাদারিত্বের জায়গায় আমি কোনো ছাড় দিই না। আমি শতরান করলাম নাকি শূন্য, এটা আমার সাফল্য নয়, কারণ ফলাফল আমার হাতে নেই। তবে চেষ্টা, প্রক্রিয়া আর সততা এই জিনিসগুলো আমার নিয়ন্ত্রণে। আর এটাই আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। শুধু ক্রিকেটে নয়, জীবনের সবকিছুতেই আমি এই নীতিতে বিশ্বাস করি।'