এবার পুঁজিবাজারও মাতালো ‘বেবি শার্ক ডু ডু ডু’
সময়টা ২০১৫-১৬ সাল। হঠাৎ করেই ইউটিউবে সাড়া ফেলল একটি শিশুতোষ গান। গানের সঙ্গে অতুলনীয় নাচ। ওই সময় বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের 'বেবি শার্ক ডু ডু ডু' গান শোনাতেন।
প্রায় নয় বছর আগে ইউটিউবে 'বেবি শার্ক ড্যান্স' নামে আপলোড করা ভিডিওটি এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০ কোটি বার দেখা হয়েছে। ইউটিউবে আর কোনো ভিডিওর এত বেশি ভিউ নেই। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কিউবান গায়ক লুইস ফনসি'র গান 'দেসপাসিতো'র চেয়েও দ্বিগুণের বেশি ভিউ পেয়েছে বেবি শার্ক।
দীর্ঘ বছর জনপ্রিয়তার সাগরে ভেসে এবার সিউলের পুঁজিবাজারে নাম লিখিয়েছে পিংকফং। এসেই বাজার মাতালো তারা।
আজ মঙ্গলবার লেনদেন শুরুর পরই ৬০ শতাংশ বেড়েছে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম।
পিংকফং-এর ব্যবসার মধ্যে আছে শিশুদের জন্য নির্মিত অ্যানিমেশন ও শিক্ষামূলক উপকরণ।
শেয়ারপ্রতি দাম ৩৮ হাজার কোরীয় ওনে বা ২৬ মার্কিন ডলার লেনদেন শুরুর পর নিমিষেই তা আকাশচুম্বী হয়ে যায়। অর্থাৎ, এর দাম বেড়ে যায় ৬০ শতাংশ। সর্বোচ্চ ৬১ হাজার ৫০০ ওনে (৪৪ ডলার) বিক্রি হয় এই শেয়ার। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এর দাম ৫৬ হাজার থেকে ৬১ হাজারের মধ্যে ছিল।
'বেবি শার্ক' গানের ভিডিওতে হাঙ্গর পরিবারের বাবা-মা ও সন্তানদের একের পর এক পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া বেবি শার্ক চরিত্রটিকে এক পর্যায়ে নিউইয়র্কের বিখ্যাত মেইসি'জ প্যারেডে বেলুন আকারে দেখা যায়।
২০১০ সালে পিংকফং এর গোড়াপত্তন হয়। তাদের আয়ের মূল উৎস অনলাইনে কনটেন্ট বিক্রি ও লাইভ অনুষ্ঠান।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, বাজারে নতুন শেয়ার আসার পর এ ধরনের মূল্য বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়।
আজ মঙ্গলবার হিউংকুক সিকিউরিটিজ-এর কর্মকর্তা চোউ জং-কিউং এএফপিকে জানান, 'তত্ত্বগতভাবে পুঁজিবাজারে নতুন প্রতিষ্ঠান আসলে তাদের শেয়ারের দাম প্রথমদিনে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়ে যায়।'
পিংকফংয়ের শেয়ারের দাম বেড়ে যাওয়াকে স্বাভাবিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত বছর পিংকফং-এর রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৯৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ওন। আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।
প্রতিষ্ঠানটির কার্যকর মুনাফা ১৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ওন। এটা এর আগের বছরের তুলনায় চার গুণ বেশি।
গত মাসে পিংকফং-এর প্রধান নির্বাহী কিম মিন-সেওক জানান, তার প্রতিষ্ঠানে 'নিজেদের বানানো কনটেন্ট থেকে মুনাফা অর্জনের কাঠামো তৈরি হয়েছে।'
তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ইডেইলিকে বলেন, 'আমরা কনটেন্ট বানানোর খরচ কমাতে নিজেদের ইউটিউব চ্যানেল ও অ্যাপের ওপর নির্ভর করি। ফলে বাইরের প্রতিষ্ঠানের ওপর আমাদের নির্ভরতা কম। মূলত এ কারণেই আমরা কম খরচে বেশি মুনাফা করতে পারি।'
দক্ষিণ কোরিয়ার কে-পপ ব্যান্ড ও সংগীত, টিভি সিরিজ ও মুভি এখন বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। রেকর্ড সৃষ্টিকারী ব্যান্ড বিটিএস ও ব্ল্যাকপিংক, নেটফ্লিক্সের অত্যন্ত জনপ্রিয় সিরিজ 'স্কুইড গেম' ও 'কেপপ ডেমন হান্টার' এর বড় প্রমাণ।

