জোহরান মামদানির জয়: ইহুদিদের নিউইয়র্ক ছাড়ার ডাক ইসরায়েলি মন্ত্রীর

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
5 November 2025, 10:18 AM

নিউইয়র্কের তরুণ ও নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন তৈরি করে মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাট নেতা জোহরান মামদানি। তার এই ঐতিহাসিক বিজয়ের অন্যতম কারণ গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান।

জোহরানের জয়ের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে নিয়ে শুরু হয় ইসরায়েলিদের নেতিবাচক প্রচারণা।

এক ইসরায়েলি মন্ত্রী নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি তাকে 'হামাস সমর্থক' আখ্যা দিয়ে নিউইয়র্কের ইহুদিদের যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে ইসরায়েলে চলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি প্রবাসী কল্যাণ ও ইহুদিবিদ্বেষ দমন মন্ত্রী আমিচাই চিকলি সমাজমাধ্যম এক্সে এসব কথা বলেন।

তার ভাষ্য, 'যে শহরকে এক সময় বৈশ্বিক স্বাধীনতার প্রতিকৃতি হিসেবে দেখা হতো, সে শহরের চাবি এখন এক হামাস সমর্থকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।'

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার ও ওয়াশিংটনে আল-কায়েদার সন্ত্রাসী হামলার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, মামদানির দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে 'সেসব ধর্মান্ধ জিহাদিদের তেমন কোনো ব্যবধান নেই, যারা ২৫ বছর আগে নিজেদের শহরের তিন হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল।'

Chikli and Netanyahu
নেতানিয়াহুর সঙ্গে ডানপন্থি নেতা চিকলি। ছবি: রয়টার্স (ফাইল)

জোহরান মামদানি (৩৪) নিউইয়র্কে জীবনযাপনের খরচ কমিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন।

আগামী ১ জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়র পদ গ্রহণের পর তিনিই হবেন নগরীর প্রথম মুসলিম মেয়র। তার আগে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাদিক খান বিশ্বের অপর প্রভাবশালী মহানগরী লন্ডনের মেয়রও একজন মুসলিম।

জোহরান মামদানি সব সময়ই ইহুদিবিদ্বেষের নিন্দা করেছেন। পাশাপাশি, তিনি ইসলামবিদ্বেষেরও সমালোচনা করেন। তিনি নিজেও এ ধরনের বিদ্বেষমূলক আচরণের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

দীর্ঘদিন থেকেই ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার দাবি জানিয়ে আসছেন জোহরান মামদানি।

ইসরায়েলে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসনকে তিনি 'বর্ণবাদী' বলে আখ্যা দেন।

গাজার যুদ্ধকে 'গণহত্যা' দাবি করে ইহুদি সম্প্রদায়ের এক অংশের বিরাগভাজন হন তরুণ প্রজন্মের এই নেতা।

ইসরায়েলি মন্ত্রী চিকলি তার এক্স পোস্টে আরও বলেন, 'নিউইয়র্ক আর কখনোই আগের মতো হবে না। বিশেষত, ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য। শহরটি সজ্ঞানে, পায়ে হেঁটে এমন এক নরকের দিকে আগাচ্ছে, যেখানে লন্ডন ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে।'

'আমি নিউইয়র্কের ইহুদিদের আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন ইসরায়েলে তাদের নতুন আবাস গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন', যোগ করেন তিনি।

জোহরান মামদানির প্রস্তাবিত নীতি, ধর্মবিশ্বাস ও বংশপরিচয়কে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক অঙ্গনের হর্তাকর্তারা প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তাকে নির্বাচনে হারাতে ধনকুবেররা বিরোধী প্রার্থীদের নির্বাচনী তহবিলে অর্থের বন্যা বইয়ে দেন।

পাশাপাশি, রক্ষণশীল গণমাধ্যমগুলোর সঞ্চালক ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই তরুণ ডেমোক্র্যাট নেতার নিন্দার পাশাপাশি 'কমিউনিস্ট' বলেও গালি দিয়েছেন।

নির্বাচনী দৌড়ের একদম শেষ পর্যায়ে আগুনে ঘি ঢালার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। দাবি করেন, মামদানি 'ইহুদিদের ঘৃণা করেন'।

তা সত্ত্বেও, নিউইয়র্কবাসীর ভোটে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেন জোহরান মামদানি।