'অপমানিত' বোধ করায় মেয়াদের অর্ধেক পথেই পদত্যাগ করতে চান রাষ্ট্রপতি
ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের পরেই পদত্যাগ করতে চান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বঙ্গভবন থেকে আজ বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে দেওয়া এক হোয়াটসঅ্যাপ সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তাকে উপেক্ষা করায় 'অপমানিত' বোধ করেছেন বলে রয়টার্সকে জানান তিনি।
তিনি জানান, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তাকে দায়িত্বে থাকতে হবে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থেকে এ দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
সাহাবুদ্দিনের অভিযোগ, প্রায় সাত মাস ধরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস তার সঙ্গে দেখা করেননি। সেইসঙ্গে তার প্রেস উইংকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বরে বিদেশি মিশনগুলো থেকে তার ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এতেও তিনি 'অত্যন্ত অপমানিত' বোধ করেছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, ছবি সরানোর বিষয়ে ইউনূসকে চিঠি লিখলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, প্রথমদিকে কিছু শিক্ষার্থী তার পদত্যাগ দাবি করলেও সাম্প্রতিক সময়ে কোনো রাজনৈতিক দল তাকে সরে দাঁড়াতে বলেনি।
বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী হলেও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনিই সশস্ত্র বাহিনীর আনুষ্ঠানিক সর্বাধিনায়ক।
সাহাবুদ্দিন ওই সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
তিনি বলেন, সেনাপ্রধান তাকে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের রক্তাক্ত বিক্ষোভের পরও তার 'ক্ষমতা দখলের কোনো ইচ্ছা নেই' এবং তিনি গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন চান।
২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সাহাবুদ্দিনই দেশে অবশিষ্ট একমাত্র সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
হাসিনা দেশ ছাড়ার পর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কি না—রয়টার্সের এমন প্রশ্নে সাহাবুদ্দিন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই তিনি স্বাধীনভাবে কাজ করছেন এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।
২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করার পর ৭৫ বছর বয়সী সাহাবুদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।