সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের প্রথম সচিব হলেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী
সরকার অধ্যাদেশ জারির পরদিনই সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় পেয়েছে এর প্রথম সচিব। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীকে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করবেন।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির আদেশে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আইন মন্ত্রণালয় গত ৩০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে সচিব পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়। এর ধারাবাহিকতায় প্রধান বিচারপতি ১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীকে নবগঠিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেন, যা তিনি বর্তমান দায়িত্বের পাশাপাশি পালন করবেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি ও সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় উভয়ের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের ৪ নম্বর ধারার (২) ও (৪) উপধারা অনুযায়ী সচিবালয়ের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ প্রধান বিচারপতির হাতে থাকবে। আইন অনুযায়ী সচিবালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন সচিবকে প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
নিম্ন আদালতের বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) অধ্যাদেশ জারির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে দ্রুত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা ও সচিবালয় কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় গেজেট জারিসহ সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আহ্বান জানায়।
বিজেএসএর সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মজহারুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, দেশের মানুষের জন্য বহু প্রতীক্ষিত স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করায় আমরা আনন্দিত।
তারা আরও বলেন, এই অধ্যাদেশ একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে থাকবে এবং জনগণের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার অন্যতম প্রধান ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে। ইতিহাসে বহুদিন ধরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা হলেও বিভিন্ন কারণে দেশে তা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৯৯ সালে মাসদার হোসেন মামলার রায় স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়েছিল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইনের শাসন দেখতে আগ্রহী বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাসহ জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দাবি ছিল সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব সচিবালয় থাকবে, যার অধীনে পুরো বিচার প্রশাসন পরিচালিত হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করেছে। এটি নিঃসন্দেহে জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন এবং বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে এক সোনালি সংযোজন।
