মেয়ের বিয়েতে মাইক বাজানোয় সালিশে বাবা-মাকে বেত্রাঘাত, ৩০ হাজার টাকা জরিমানা
মেয়ের বিয়েতে মাইক বাজানোর কারণে স্থানীয় সালিশে একটি পরিবারের সদস্যদের বেত্রাঘাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে পরিবারটিকে।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গতকাল বুধবার সালিশ বিচারের পর এ শাস্তি দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রেজানা যায়, মেয়ের বিয়েতে মাইক ব্যবহার করার কারণ জানতে স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী পরিবারটির কাছে যায়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন সালিশ-বিচারের সভা বসান।
মেয়ে বাবা শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, 'মেয়ের বিয়েতে শখ করে মাইক বাজিয়েছি। এর জন্য স্থানীয় আফসার, ছারোয়ার ও মালেক আমাদের পরিবারের সবাইকে মারধর করে। তারা আবার আমাদের নিয়ে সালিশ বাসায়। আলাউদ্দিন মাঝি, তছলিম, আনোয়ার মাঝি, সেন্টু ও রফিকসহ কয়েকজন সালিশদার আমাদের সবাইকে বেত্রাঘাতের শাস্তি দেন। ক্ষমা চাওয়ার পরেও তারা শোনেনি।'
তিনি আরও বলেন, 'বেত্রাঘাতের পর তারা আবার ৩০ হাজার টাকা জরিমানাও করে। টাকা জোগাড় করতে না পারায় আফসার আমার মেয়ের জামাইয়ের অটোরিকশা আটকে রেখেছে।'
সালিশে উপস্থিত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'মাইক বাজানোর কারণ জিজ্ঞাসা করায় হট্টগোল বাধে। সেখানে আমাদের একজনের ৫০ হাজার টাকা হারিয়ে যায় বলে ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। সালিশে নারীদের বেত্রাঘাত করা হয়নি, পুরুষদের করা হয়েছে।'
জানতে চাইলে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ধরনের কোনো ঘটনার কথা আমার জানা নেই।'
তবে যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সাগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক ফরহাদ হোসেন বলেন, 'বিয়েতে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যাই। উভয় পক্ষকে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলি। তারা গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করায় আমি আর সেখানে থাকিনি। এরপরে তারা আমাকে আর কিছু জানায়নি।'
'কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' বলেন তিনি।