ইসরায়েল অংশ নেওয়ায় ইউরোভিশন থেকে ৪ দেশের নাম প্রত্যাহার
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে ইসরায়েলকে পপ সঙ্গীতের জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা ইউরোভিশন থেকে নিষিদ্ধের দাবি উঠেছিল। তবে সে দাবি মানা হয়নি। ২০২৬ সালের প্রতিযোগিতাতেও বহাল তবিয়তে অংশ নেবে ইসরায়েল।
এ বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি স্পেন, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও নেদারল্যান্ডস। আগামী বছরের প্রতিযোগিতা থেকে ওই চার ইউরোপীয় দেশ নিজেদের নাম সরিয়ে নিয়েছে।
আজ শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ বিষয়টি জানা গেছে।
ইসরায়েলের অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইউরোভিশনের আয়োজকরা বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন। গাজার যুদ্ধে ইসরায়েলের ভূমিকা ও কয়েকটি সদস্য দেশের বয়কটের হুমকি—এগুলোই ছিল আলোচনার মূল বিষয়বস্তু।
সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের নিরপেক্ষ তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ দেশটির শীর্ষ নেতারা এই গণহত্যায় ইন্ধন যুগিয়েছেন।
তবে ইসরায়েল সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, আত্মরক্ষার জন্য গাজায় যুদ্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। তেল আবিবের মত, তারা কোনো আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে না। গণহত্যার তো প্রশ্নই ওঠে না।
ইউরোভিশনের মূল আয়োজক দ্য ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (ইবিইউ) ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে ভোট আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফলে দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও কোন সুযোগ থাকেনি।
তবে তারা জানায়, প্রতিযোগিতার নিরপেক্ষ অবস্থানকে আরও সুসংহত করতে 'সুনির্দিষ্ট পরিবর্তন' আনা হবে।
ইবিইউ'র সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেন ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজাক হারজগ।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সার জানান, তিনি বয়কটকারী দেশগুলোর আচরণে 'লজ্জিত'।
ইবিইউ'র সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ৫৬।
গাজায় গণহত্যার প্রেক্ষাপটে বেশ কয়েকটি দেশ ইউরোভিশনে ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে তাদের উদ্বেগ-আপত্তির কথা প্রকাশ করেছে। এই সংঘাতে ৭০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে এলে সবার আগে স্পেন ওই প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আক্রমণ শুরুর পর থেকেই এ বিষয়টির বিরুদ্ধে সোচ্চার স্পেন। ইতোমধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন দেশের মর্যাদা দেওয়ার মতো উদ্যোগ নিয়েছে মাদ্রিদ। স্পেনের সরকারী গণমাধ্যম আরটিভিই প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
বাকি তিন দেশও একই ধরনের উদ্যোগ নেয়।
১৯৫৬ সাল থেকে শুরু হয় ইউরোভিশন। এই অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি দেশ থেকে প্রতিযোগীরা এসে সেরা গানের খেতাব জয়ের চেষ্টা চালায়।
গতবারের প্রতিযোগিতার দর্শক ছিল ১৬ কোটি ৬০ লাখ।
প্রতিযোগিতার আয়োজক একে রাজনীতি মুক্ত রাখার চেষ্টা করে। তবে সুইজারল্যান্ড ও সুইডেনে আয়োজিত সর্বশেষ দুই আসরে ফিলিস্তিনপন্থিরা বিক্ষোভ করেছেন।
মজার বিষয় হলো, ইউক্রেনে হামলা চালানোর দায়ে ২০২২ সালে রাশিয়াকে ইউরোভিশন থেকে নিষিদ্ধ করা হয়।

