প্রথম ফিলিস্তিনি সভাপতি বেছে নিলো অক্সফোর্ড ইউনিয়ন

By স্টার অনলাইন ডেস্ক
1 December 2025, 08:38 AM

অক্সফোর্ড ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফিলিস্তিনি নারী আরওয়া এলরাইশ।

গতকাল রোববার এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম দ্য জেরুসালেম পোস্ট।

মূলত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ডিবেটিং সোসাইটি অক্সফোর্ড ইউনিয়ন ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড শহরে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮২৩ সালে। এটি ব্রিটেনের অন্যতম প্রাচীন ইউনিভার্সিটি ইউনিয়ন ও বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক স্টুডেন্টস সোসাইটি।

প্রথম ফিলিস্তিনি সভাপতি হিসেবে আরওয়াকে বেছে নিয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিয়ন।

দ্বিতীয় বর্ষের পিপিই (দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি) বিষয়ের শিক্ষার্থী আরওয়া হানিন এলরাইশ ২০২৬ সালের ট্রিনিটি টার্মে নির্বাচিত হয়েছেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে তিনটি সেমিস্টার। এগুলো মাইকেলমাস (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর), হিলারি (জানুয়ারি থেকে মার্চ) ও ট্রিনিটি (এপ্রিল থেকে জুন) টার্ম নামে পরিচিত।

বিতর্কিত পূর্বসূরি

এমন সময়ে নির্বাচিত হয়েছেন আরওয়া, যখন অক্সফোর্ড ইউনিয়ন সমালোচনা ও তুমুল বিতর্কের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।। আগের সভাপতি ও তার পূর্বসূরি জর্জ আবারনইয়ে বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পদ ছাড়তে বাধ্য হন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র, ডানপন্থি রাজনৈতিক কর্মী ও বিশ্লেষক চার্লি কার্ক আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনার পর উল্লাস প্রকাশ করে সামাজিকমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন জর্জ। বলেন, 'চার্লি কার্ক গুলি খেয়েছেন, উল্লাস।'

ওই ঘটনাই কাল হয়ে দাঁড়ায় জর্জের জন্য। নিন্দা-প্রতিবাদের মুখে নিজেই নিজের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। পরবর্তীতে অনাস্থা ভোটে তাকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

George Abaraonye
প্রয়াত চার্লি কার্কের সঙ্গে জর্জের বিতর্ক। ছবি: স্ক্রিণশট

স্টুডেন্ট ইউনিয়নের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে আরওয়া বলেন, 'ইউনিয়নের সদস্যরা আমার ও আমার দলের প্রতি ভরসা ও বিশ্বাস রেখেছেন। এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ইউনিয়নের বৃহত্তর লক্ষ্য পূরণে সবাই ভেদাভেদ ভুলে এগিয়ে এসেছেন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ২০২৬ সালের ট্রিনিটি টার্মে সোসাইটির সদস্যদের সেবা করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।'

নিজেও বিতর্কিত আরওয়া

আরওয়া নিজেও বিতর্কের বাইরে নন। পূর্বসূরি জর্জের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাববিষয়ক ইউনিয়ন কমিটির বৈঠকে তিনি সাবেক শিক্ষার্থীদের 'বর্ণবিদ্বেষী' আখ্যা দেন। অনাস্থা ভোটের আগে তিনি বলেন, 'সাবেক শিক্ষার্থীরা জেনেবুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম। তাই তারা জর্জকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দিতে চান।' তিনি সাবেকদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ারও দাবি জানান।

আরওয়া আরও জানান, শৈশবে তিনি ও তার পরিবার অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে গিয়েছে।

তিনি নিজেকে 'ফিলিস্তিনি' দাবি করলেও গাজার কোন এলাকায় বাস করতেন, তা জানা যায়নি। কাতারের দোহা কলেজ থেকে এ লেভেল পাস করেন আরওয়া। তার বাবা মোহামেদ এলরাইশ কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক গবেষণা বিভাগের প্রধান ছিলেন।

২০১২ সাল থেকে মোহামেদ এলরাইশ কাতারে বাস করছেন। এর আগে তিনি ২০০২ থেকে ২০১১ পর্যন্ত লন্ডনে ছিলেন। ধারণা করা হয়, আরওয়ার জন্ম ২০০৫ থেকে ২০০৭ এর মধ্যে।