নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল তুরস্ক
গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সরকারের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক। শুক্রবার দেশটি এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বলে জানায় এএফপি।
এ ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা'আর বলেন, ইসরায়েল 'ঘৃণা ও তীব্র অবজ্ঞার সঙ্গে' সম্পূর্ণভাবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনাকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের 'রাজনৈতিক প্রচার কৌশল' বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ইস্তাম্বুল প্রসিকিউটর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তবে তাদের পুরো তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তালিকায় রয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ, জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির এবং সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির। তুরস্কের অভিযোগ, এই কর্মকর্তারা গাজায় ইসরায়েলের 'পদ্ধতিগতভাবে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে' জড়িত।
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের শুরু থেকেই তুরস্ক এর অন্যতম সমালোচক। গত বছর দেশটি দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে একযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অংশ নেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১০ অক্টোবর থেকে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নাজুক এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।
হামাস তুরস্কের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, যা ন্যায়, মানবতা ও ভ্রাতৃত্বের আদর্শে বিশ্বাসী তুর্কি জনগণ ও তাদের নেতাদের আন্তরিক অবস্থানকে তুলে ধরে, যারা আমাদের নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি অবিচল সমর্থন জানিয়ে আসছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা'আর বলেন, এরদোয়ানের তুরস্কে বিচার বিভাগ বহু আগেই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, সাংবাদিক, বিচারকদের দমন করার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েলের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাভিগদর লিবারম্যান বলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাই প্রমাণ করে কেন তুরস্কের গাজায় কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা থাকা উচিত নয়।
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধোত্তর গাজায় স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগ দিতে চায় তুরস্ক। তবে ইসরায়েল মনে করে, হামাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে তুরস্কের অংশগ্রহণ অনুচিত।
ইসরায়েল বিভিন্ন সময় জাতিসংঘ কমিশন, কয়েকটি এনজিওসহ কিছু দেশের গণহত্যার অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' ও 'ইহুদি-বিরোধী' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।