কান বিজয়ী ইরানি পরিচালক জাফর পানাহির কারাদণ্ড
কান চলচ্চিত্র উৎসবে এ বছর ইট ওয়াজ জাস্ট অ্যান অ্যাক্সিডেন্ট সিনেমার জন্য পাম দ'অর জেতা ইরানি পরিচালক জাফর পানাহিকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইরান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন বলা হয়, রায় অনুযায়ী ৬৫ বছর বয়সী পানাহির ওপর দুই বছরের বিদেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকবে এবং তিনি কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না।
তার আইনজীবী মোস্তফা নিলি জানিয়েছেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
নিলি বলেন, পানাহির বিরুদ্ধে অভিযোগ 'রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণামূলক কার্যকলাপ'। তবে তিনি বিস্তারিত জানাননি।
তিনি আরও বলেন, 'পানাহি বর্তমানে ইরানের বাইরে আছেন।'
২০২৫ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে পানাহির ইট ওয়াজ জাস্ট অ্যান অ্যাক্সিডেন্ট সিনেমাটি প্রধান পুরস্কার পাম দ'অর জেতে।
গত মাসে পানাহি নিজের সর্বশেষ চলচ্চিত্র প্রচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক ও কলোরাডোর টেলুরাইড শহর সফর করেন।
ফ্রান্স ইতোমধ্যেই এই সিনেমাটিকে তাদের সরকারি অস্কার মনোনয়ন হিসেবে নির্বাচিত করেছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে এটি সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার বিভাগে শর্টলিস্টে জায়গা পাবে।
ইরানি গণমাধ্যম কান উৎসবে পানাহির সাফল্যের সংবাদ প্রকাশ করেছিল এবং তার ছবি ছাপিয়েছিল।
পানাহি ১৯৯৫ সালে তার প্রথম চলচ্চিত্র দ্য হোয়াইট বেলুন দিয়ে কানে প্রথম ফিচার পুরস্কার জিতেছিলেন। পরে ইউরোপের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেন।
২০০৯ সালের গণবিক্ষোভকে সমর্থন এবং রাষ্ট্রবিরোধী সমালোচনামূলক সিনেমা নির্মাণের কারণে ২০১০ সালে তাকে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও বিদেশ ভ্রমণে নিষিদ্ধ করা হয়। 'রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রচারণার' অভিযোগে তাকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে তিনি মাত্র দুই মাস জেলে ছিলেন এবং পরে জামিনে মুক্তি পান।
সিনেমা নির্মাণে ২০ বছরের নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার এক বছর পর তিনি দিস ইজ নট অ্যা ফিল্ম নামের একটি ডকুমেন্টারি কান উৎসবে পাঠান। একটি কেকের ভেতর লুকানো ফ্ল্যাশ ড্রাইভে করে তিনি এটি পাঠিয়েছিলেন বলে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়।
এরপর ২০১৫ সালে ট্যাক্সি নির্মাণ করেন। সিনেমাটি পুরোপুরি একটি গাড়ির ভেতরে শুট করা হয়, যেখানে তিনি নিজেই ট্যাক্সিচালকের চরিত্রে অভিনয় করেন।
২০২২ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়। তবে সাত মাস পরে মুক্তি পান।