মিশরে ফেরাউনদের সংস্কৃতি শাম এল-ন্যাসিম

আফছার হোসাইন
আফছার হোসাইন
6 May 2024, 20:07 PM

মিশরে উদযাপন করা হলো ফেরাউনিক ঐতিহ্য ঋতুরাজ 'শাম-এল-ন্যাসিম' (বাতাসের সুঘ্রাণ)।

মুসলমান ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা একসঙ্গে উৎসবটি উদযাপন করেন। প্রাচীন মিশরীয়রা খ্রিস্টপূর্ব দুই হাজার ৭০০ থেকে এই দিনে শাম-এল-ন্যাসিম উদযাপন করে আসছেন।

দেশটির রাজধানী কায়রোতে অবস্থিত গিজার দ্য গ্রেট পিরামিডের সঙ্গে সূর্য কিরণ পরিমাপ করে প্রতি বছর শাম-এল-ন্যাসিমের তারিখ নির্ধারণ করা হয়, সাধারণত এটি কপটিক অর্থোডক্সদের ইস্টার সানডের পরের সোমবার হয়ে থাকে। এই দিনে মিশরে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য সমান হয়।

sadia_ahmed.jpg

দিবসটি উপলক্ষে হেলিও পুলিস আন্তর্জাতিক পার্কে কায়রো সিটি গভর্নর মেজর জেনারেল খালেদ আবদেল-আল মিশরীয়দের সঙ্গে শাম-এল-ন্যাসিম উদযাপনে অংশ নেন এবং শিশু-কিশোরদের মাঝে ফুল, মিষ্টি ও খেলনা উপহার দেন।‌

উৎসবটি প্রাচীন মিশরীয়দের কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত। শাম-এল-ন্যাসিম নামটি প্রাচীন মিশরীয় ভাষা আফ্রাশিয়ান থেকে উদ্ভূত হয়ে কপটিক ভাষা থেকে এসেছে। যার মূল উচ্চারণটি হলো "তশোম-নি-তশম" যার অর্থ, উদ্যানের চারণ ভূমি।

banani-mosque.jpg

এই উৎসবের কোনো ধর্মীয় পটভূমি নেই। এই দিনে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মিশরীয় পরিবারগুলো ফেশিখ বা রিংগা মাছ (অনেকটা নোনা ইলিশের মতো), পেঁয়াজ পাতা, লেটুস ও সেদ্ধ ডিম নিয়ে নীল নদের পাড়, চিড়িয়াখানা কিংবা বিভিন্ন উদ্যানে চলে যায়।

ছোট বাচ্চারা সেদ্ধ ডিমের খোসার ওপর বিভিন্ন রঙ দিয়ে সাজিয়ে তোলে। পরে খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া হয়। উদ্যানগুলোতে সারা দিন খেলাধুলা, আড্ডা চলে।

bogra school

যদিও গত কয়েক বছর ধরে মিশরীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ফাসিক ও রিংগা খেতে জনগণকে নিরুৎসাহিত করে আসছে। নোংরা পরিবেশে ফাসিক ও রিংগা তৈরি এবং প্রক্রিয়াজাত করায় প্রতি বছরই শাম-এল-ন্যাসিমের পর কিছু মানুষ পেটের পীড়ায় ভোগেন এবং কখনো কখনো মৃত্যুও হয়।

করোনা মহামারি ও রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় দিনের বেলা খোলা আকাশের নিচে উৎসবটি উদযাপন বন্ধ ছিল।

এবার ইস্টার সানডে, শাম-এল-ন্যাসিম ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে মিশরের সরকার টানা চার দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে।