জমল না লড়াই, পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে সুপার ফোরের দ্বারপ্রান্তে ভারত

By স্পোর্টস ডেস্ক
14 September 2025, 17:49 PM
UPDATED 15 September 2025, 00:25 AM

ম্যাচের গায়ে সাঁটা ছিল হাইভোল্টেজ তকমা। কিন্তু দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বহুল প্রতীক্ষিত লড়াই জমল না একটুও। ব্যাটিং ব্যর্থতায় পাকিস্তান আটকে গেল অল্প পুঁজিতে। এরপর লক্ষ্য তাড়ায় ভারতকে কোনো বেগ পেতে হলো না। আরেকটি অনায়াস জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেল সূর্যকুমার যাদবের দল।

রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে 'এ' গ্রুপের একপেশে ম্যাচে সালমান আগার দলের বিপক্ষে ২৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেট জিতেছে ভারত। টস জিতে আগে ব্যাট করা পাকিস্তানের ৮ উইকেটে ১২৭ রানের জবাবে ১৫.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১৩১ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে তারা। দুই ম্যাচে ভারতের এটি দ্বিতীয় জয়, সমান ম্যাচে পাকিস্তানের প্রথম হার।

নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারতকে সুর বেঁধে দিয়েছিলেন বোলাররা। তাদেরকে জবাব দেওয়ার কোনো উপায় খুঁজে পাননি পাকিস্তানের ব্যাটাররা। ৪ ওভারে ১৮ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপ যাদব। ২ উইকেট পেতে আরেক বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেলও দেন ৪ ওভারে ১৮ রান। ডানহাতি পেসার জসপ্রিত বুমরাহ ৪ ওভারে ২৮ রানের বিনিময়ে শিকার করেন সমানসংখ্যক উইকেট।

পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন একপ্রান্ত আগলে থাকা ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান। তবে তিনি ছিলেন খোলসবন্দি। ১৭তম ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে কুলদীপের শিকার হওয়ার আগে খেলেন ৪৪ বল। তার ব্যাট থেকে আসে একটি চার ও তিনটি ছক্কা।

৬৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলটি বলার মতো সংগ্রহ পায় মূলত শাহিন শাহ আফ্রিদির ক্যামিও ইনিংসে। নয়ে নেমে অপরাজিত ৩৩ রান করেন তিনি। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৬ বলে চারটি ছক্কা হাঁকান তিনি। তাছাড়া, দুই অঙ্কের ঘরে আর যেতে পারেন ফখর জামান (১৫ বলে ১৭ রান), ফাহিম আশরাফ (১৪ বলে ১১ রান) ও সুফিয়ান মুকিম (৬ বলে ১০ রান)।

সাদামাটা লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত শুরু পায় ভারত। ৩.৪ ওভারের মধ্যে দুই ওপেনার ফিরলেও স্কোরবোর্ডে ততক্ষণে উঠে যায় ৪১ রান। শুবমান গিল করেন ৭ বলে দুটি চারে ১০ রান। আইসিসি টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং র‍্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর খেলোয়াড় অভিষেক শর্মা চালান তাণ্ডব। মাত্র ১৩ বলে খেলেন ৩১ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে আসে চারটি চার ও দুটি ছক্কা।

রান রেটের চাপ না থাকায় দেখেশুনে খেলতে থাকেন অধিনায়ক সূর্যকুমার ও তিলক বর্মা। তৃতীয় উইকেটে তারা যোগ করেন ৫২ বলে ৫৬ রান। তিলককে (৩১ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ৩১ রান) বোল্ড করে জুটি ভাঙেন অনিয়মিত স্পিনার সাইম আইয়ুব। এর আগে গিল ও অভিষেককেও সাজঘরে পাঠান তিনি। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ৪ ওভারে ৩৫ রানে তার শিকার ৩ উইকেট।

পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা আগের পাঁচটি টি-টোয়েন্টিতে সূর্যকুমার ছিলেন ব্যর্থ। স্রেফ ১২.৮০ গড় ও ১১৮.৫১ স্ট্রাইক রেটে তার রান ছিল মোটে ৬৪। সর্বোচ্চ ১৮ রানের ইনিংসটি তিনি খেলেছিলেন দুবাইতেই, ২০২২ সালের এশিয়া কাপে। এদিন ব্যর্থতার শিকল ভেঙে তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৭ রানে। ৩৭ বল মোকাবিলায় মারেন পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা।

সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সূর্যকুমার মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন। ভারতকে নিয়ে যান কাঙ্ক্ষিত জয়ের বন্দরে। অন্যপ্রান্তে শিবাম দুবে অপরাজিত থাকেন ৭ বলে একটি ছক্কায় ১০ রানে। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেও বল হাতে মূল দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার শাহিন। ২ ওভারে ২৩ রান দিয়ে থাকেন উইকেটশূন্য।

এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের শেষ ম্যাচ আগামী বুধবার স্বাগতিক দল সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। আর ভারতের শেষ ম্যাচ শুক্রবার নবাগত দল ওমানের বিপক্ষে।