শ্রমিক নিয়োগে মালয়েশিয়ার বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব না: আসিফ নজরুল
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ফের শ্রমবাজার খুললেও মালয়েশিয়ার দেওয়া বেশ কিছু শর্তকে 'অগ্রহণযোগ্য' মনে করছে ঢাকা।
এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, 'বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়। এগুলো পূরণ করতে গেলে আবারও সিন্ডিকেট হবে।'
আজ বুধবার ঢাকায় হোটেল শেরাটনে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও'র সহযোগিতায় তৈরি ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্মের (ওইপি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, 'মালয়েশিয়ার দেওয়া কয়েকটি শর্তের ব্যাপারে আমরা শক্ত আপত্তি জানিয়েছি। বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য আরও অনুকূল অবস্থা নিশ্চিত করতে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাবো।'
গত অক্টোবরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা যৌক্তিক করার জন্য ১০টি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড নির্ধারণ করে। তাদের দাবি, এতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
শ্রমিক নিয়োগে মালয়েশিয়ার নতুন মানদণ্ড অনুযায়ী— নিয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কমপক্ষে ৫ বছর কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা, বিগত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড এবং কমপক্ষে তিনটি দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এছাড়া বৈধ লাইসেন্স, সদাচারণ সনদপত্র, নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র, কমপক্ষে ৫টি আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে সুপারিশপত্র, ১০ হাজার বর্গফুটের স্থায়ী অফিস থাকতে হবে। সেই সঙ্গে মানবপাচার, মানি লন্ডারিং বা অন্য কোনো অপরাধে সংশ্লিষ্ট থাকা যাবে না।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, 'এ ধরনের কঠোর শর্ত প্রয়োগ করলে সিন্ডিকেটের পথ প্রশস্ত হতে পারে। কেবলমাত্র হাতেগোনা কয়েকটি সংস্থা কর্মী পাঠাতে সক্ষম হবে।'
উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক শ্রমবাজারের ওপর জোর দেন তিনি।
'ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম' সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, 'নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত, জালিয়াতি ও প্রতারণা এড়াতে অভিবাসী শ্রমিকদের সহায়তার জন্য প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে।'
অতীতে বহুবার জটিলতা এবং সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে। ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে একবার বন্ধ হওয়ার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ২০২২ সালে এটি আবার চালু হয়।